শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতায় ৪টি কার্যকর টিপস নিয়ে আজকের আলোচনা। প্রথমেই বলি শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতার দিকে নজর রাখা প্রত্যেক বাবা-মায়ের কর্তব্য।
প্রতিটি বাবা-মা ই চায় তাদের শিশু সন্তানকে আগলে রাখতে । প্রত্যেক বাবা-মা চিন্তিত থাকেন তার সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে। প্রতিটি শিশুর পিতা-মাতা চান তার শিশুটি যেন সুস্বাস্থ্যবান ও বলবান হয়ে ওঠে।
যদিও বর্তমান সময়ে শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়টি বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কীভাবে একটি শিশু সঠিক-পুষ্টি দ্বারা স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠবে সেটাই এখন বড় প্রশ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সঠিক পুষ্টি না-পেলে শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠবে না। সুখাদ্য ও সঠিক পুষ্টিই পারে একটি শিশুর জীবন সুন্দরময় করে তুলতে।
শিশু স্বাস্থ্য সেবা
গর্ভধারণ থেকে শুরু করে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর যত্ন নেওয়াকে সহজ ভাষায় শিশু স্বাস্থ্য সেবা বলা হয়। শিশুর যত্ন সেবা চলতে থাকে পর্যায়ক্রমিক ভাবে, যেমন—
- জন্মের পর থেকে আঠাশ দিন পর্যন্ত সদ্যেজাতর যত্ন নেওয়া।
- এক মাস থেকে বারো মাস পর্যন্ত শিশুর যত্ন নেওয়া।
- এক বছর থেকে দু’বছর পর্যন্ত শিশু হাঁটতে শেখার যত্ন নেওয়া।
- দুবছর থেকে পাঁচ বছর অবধি প্রাক-স্কুল শিশুর যত্ন নেওয়া হয়।
এভাবে পর্যায়ক্রমিকভাবে শিশু স্বাস্থ্য সেবা করা হয়।
শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতার ৪টি উপায়
রাস্তার অতিরিক্ত তেলে ভাজা, ফাস্ট ফুড, আইসক্রিম, ধুলো বালি পড়া খাবার ইত্যাদি থেকে শিশুদের দূরে রাখুন, কারণ এই সমস্ত খাবারের প্রতি শিশুদের আগ্রহ সব থেকে বেশি থাকে।
অনেক সময় শিশুদের জেদের কাছে বাবা-মায়েরা হার মেনে যায়। যার ফলে শিশুরা এসব খাবারে স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, যার দরুণ বাচ্চারা স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়টি ছোটবেলায় তৈরি করে দিতে হয় শিশুদের মাঝে। তাই ছোটবেলা থেকে খেলার ছলে ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস করে তুলুন।
পুষ্টিকর খাবার
ছোটবেলা থেকে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। যে খাবারে শিশুর বুদ্ধি বিকাশ ঘটে, মস্তিকের বিকাশ ঘটায়, শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে, ওজন বৃদ্ধি ঘটায়, যেমন—টাটকা ফল-সব্জি, প্রোটিনযুক্ত খাবার, দুধ, ডিম, মাছ ইত্যাদি।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো অভ্যাস ছোটোবেলা থেকে করলে, পরবর্তী সময়ে তারা সে সমস্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতেই পছন্দ করবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানোর সাথে সাথে তাদের স্বাস্থ্যকর খাবারের উপকারিতা জানিয়ে রাখুন, আর অবশ্যই অস্বাস্থ্যকর খাবারের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করুন।
তাহলে শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতা ধারণাটি তাদের আয়ত্তে আসবে।
নিয়মিত ব্যায়াম
শিশুরা খেলাধুলো বিষয়টি খুব পছন্দ করে। তাই আপনাকে খেলার ছলে তাদের প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করার অভ্যাসটি গড়ে তুলতে হবে।
নিয়মিত দৌড়-ঝাঁপ, খেলাধুলোর মাধ্যমে শিশুর শরীর সুস্থ থাকে ও সবল থাকে, শিশুর শরীরে রক্ত চলাচল ভালো হয়। তাদের ব্যায়ামের উপকারিতাগুলো বুঝিয়ে দিন।
লক্ষ্য রাখবেন, তারা যেন নিয়মিত ব্যায়াম করে। এভাবে তাদের শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়ে উঠবে।
পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা
নিয়মিত সাবান, শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করা, নখ কাটা, চুল আঁচড়ানো ,পরিস্কার থাকাটা শিশুদের পক্ষে খুব জরুরি।
এই অভ্যাসগুলো খুব ছোটবেলা থেকে শিশুদের শেখানো উচিত।
যেন তাদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ধারনাটি ছোটবেলা থেকেই আয়ত্তে আসে। অপরিচ্ছন্ন থাকলে রোগ-ব্যাধির প্রবণতা বাড়ে।
তাই শিশুস্বাস্থ্য সচেতনতা মধ্যে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অস্বাস্থ্যকর খাবার
আপনার শিশুকে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে রাখুন, কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার আপনার শিশুর শরীরকে অসুস্থ করে তুলতে পারে।
রাস্তায় ফাস্ট ফুড, রং মেশানো খাবার, তেলে ভাজা খাবার শিশুর শরীরকে বিপদের মুখে ফেলতে পরে।
তাই বাচ্চাদের জেদবশত এই খাবারগুলো কিনে দেওয়া একদমই ঠিক না। বাচ্চারা এই খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে স্বাস্থ্যকর খাবার তাদের মুখে রুচবে না।
শেষ কথা
এ সমস্ত বিষয়গুলো সম্পর্ক সচেতন হতে পারলে, আপনার শিশুর জীবন আনন্দময় হয়ে উঠবে।
—ডেস্ক পেরেন্টিং