Story books read in school life

স্কুলজীবনেই যে বইগুলো পড়া উচিত

স্কুলজীবনেই যে বইগুলো পড়া উচিত—এই নিয়ে যতকথা। সংক্ষিপ্তাকারে আজ থাকছে ১০টি বইয়ের পরিচিতি।

স্কুলজীবন প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর জীবনে এক মূল্যবান সময়। কারণ দীর্ঘ স্কুলজীবনে চলার পথে অনেকের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি হয়, অনেক অভিজ্ঞতার সঞ্চার হয়। আবার তখন অফুরন্ত সময় থাকে অনেক ভালো কিছু করার।

বই পড়ার অভ্যাসটা গড়ে উঠে তখনই। আজকে আমরা জেনে নেব তেমন কিছু গল্পের বইয়ের নাম—যা স্কুলজীবনেই পড়ে ফেলা উচিত।

নাট বল্টু : মুহম্মদ জাফর ইকবাল

এই উপন্যাসটি ছোট এক শিশুর গল্প নিয়ে রচিত। যে ব্যাঙ পকেটে নিয়ে ঘুমায়, নতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবন করে, দেশের কাপড় ঘাটতি কমাতে মায়ের শাড়ি ১২ হাত থেকে ৬ হাত কেটে নেয়!

একবার হলেও, এই ক্ষুদে সায়েন্টিস্টের গল্প পড়ে ফেলা ভালো, সময় নষ্ট হবে না।

শঙ্খনীল কারাগার : হুমায়ূন আহমেদ

প্রত্যহ জীবনের এক সামাজিক গল্প গড়ে উঠেছে এ-উপন্যাসে। যেখানে আছে প্রেম, ভালোবাসা, ভাই-বোনের মধ্যে মমত্ব।

বাস্তবতা নিয়ে লেখা বইটি পড়লে সাধারণ একটি পরিবারের জীবনযাপন সম্পর্কে বিস্তর ধারণা পাওয়া যায়। মনে হবে আমিও এই পরিবারের একটি অংশ। সুখ-দুঃখ-আবেগ ছুঁয়ে যাবে চরিত্র বর্ণনায়।

রবীন্দ্র ছোটগল্পসমগ্র

রবীন্দ্রনাথের যে ক’টি ছোটগল্প রয়েছে তার প্রতিটিই আলাদা স্বাদের। সমাজের প্রতিনিয়ত ঘটনাগুলোকে তুলে এনেছেন তিনি তাঁর নিপুণ তুলির আঁচড়ে। তাই একবার পড়তে বসলে আর ওঠার ইচ্ছা হবে না!

জুল ভার্নসমগ্র

জুল ভার্নকে প্রায়ই বলা হয় ‘Father of Science Fiction’। তাঁর লেখা বিজ্ঞান কল্পকাহিনীতে বলা বিভিন্ন বাহন আর যন্ত্রের অনেকগুলোই সত্যি হয়েছে আধুনিক পৃথিবীতে, সাবমেরিন এর মধ্যে অন্যতম!

অ্যাডভেঞ্চারের সাথে বিজ্ঞানের ছোঁয়া পছন্দ যাদের, তাদের অবশ্যই জুল ভার্নের সব গল্প-উপন্যাস পড়ে ফেলা উচিত। সায়েন্স ফিকশন নিয়ে এমন স্বাদুকরী লেখা খুব কম লেখকই লিখতে পেরেছেন!

পথের দাবী : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

কালজয়ী কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অন্যতম সেরা লেখাগুলোর একটি হলো পথের দাবী। বাংলা সাহিত্য ভালো লাগলে এটি অবশ্য পাঠ্য।

ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এক অসাধারণ বিপ্লবী সব্যসাচী আর তাঁর বিপ্লবের দারুণ এক কাহিনী নিয়েই এই উপন্যাসটি।

১০০ মনীষীর জীবনী

বিখ্যাত সব মনীষীদের গল্প আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমরা তাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কাহিনী শুনে অবাক হই, তাঁদেরকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করি!

বিশ্বের মনীষীদের জীবনী পড়ে আমরা যেমন তাদের গুণগুলো জানতে পারি, তেমনি তাদের মতো জীবন গঠনও করতে পারি।

আত্মিক উন্নতি, চরিত্র গঠনের জন্য স্কুলজীবন উত্তম সময়। এ-সময় এই বইটি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে।

তিন গোয়েন্দা : রকিব হাসান

যাদের রহস্য, অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ—তাদের জন্য তিন গোয়েন্দার বিকল্প নেই।

কিশোর পাশা, রবিন মিলফোর্ড, মুসা আমানের সাথে বিচরণ করা যাবে কল্পনার রাজ্যে—সেটিই বা কম কিসে?

বাংলা ভাষার নির্বাচিত ১০০ ছড়া : আহমেদ ফিরোজ

বাংলা ছড়া, বাংলা সাহিত্যের বহুবিস্তৃত ও বিকাশমান ধারার একটি উজ্জ্বল ও শক্তিনির্ভর মাধ্যম। ইংরেজি ভাষা-সাহিত্যের Rhyme-এর সঙ্গে—

এর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেলেও, বাংলা ছড়া ও কিশোর-উপযোগী কবিতা—বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

‘বাংলা ভাষার নির্বাচিত ১০০ ছড়া’ বাঙালির রসবোধের নির্বাচিত সংকলন—যা শিশুদের জন্য অবশ্য পাঠ্য একটি বই।

গালিভারস ট্রাভেল : জোনাথন সুইফট

ছোট্ট লিলিপুটদের দেশে গালিভার নামের একজন মানুষকে নিয়ে এই কল্পিত গল্পটি। মজাদার সব কাহিনী আর গভীর চিন্তার মিশেলে এই উপন্যাসটি হয়ে উঠেছে অনন্য!

অলিভার টুইস্ট : চার্লস ডিকেন্স

এটিকে অনায়াসে চার্লস ডিকেন্সের অন্যতম সেরা উপন্যাসগুলোর একটি বলা যায়। ছোট্টবেলায় জীবন সম্পর্কে ধারাপাত করতে এই বইটির বিকল্প নেই!

ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানো অলিভারকে নিয়ে লেখক অসামান্য এই লেখাটি লিখেছেন।

এতিম অলিভারের পরিবার, তার বেড়ে ওঠা, কৈশোরকাল সবকিছুই ফুটিয়ে তুলেছেন—হৃদয়স্পর্শী গল্পের মাধ্যমে!

শেষ কথা

বই মনকে জাগিয়ে তোলে, দেহকে শান্তি দেয়, আর আত্মাকে করে বিকশিত। সে-কারণে বই পড়ুন, এগিয়ে থাকুন।

ডেস্ক পেরেন্টিং। সহযোগিতা : শাদমান সাকিব সৌরভ

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.