থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর পাশে শেষ পর্যন্ত ডিসি দাঁড়ালেন। বাড়িয়ে দিলেন মানবতার হাত। ঘটনা বরিশালে। জানা যায়, বানারীপাড়ার হতদরিদ্র দিনমজুর খলিল খাঁর শিশু সন্তান মো. আব্দুল্লাহ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হন।
তাকে চিকিৎসার জন্য সামাজসেবার মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার ওষুধ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।
বুধবার (৫ আগস্ট ২০২০) বিকেলে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজের সহযোগিতায়—
শিশুটির জন্য ১০ হাজার টাকার প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়।
আক্রান্ত শিশু
আরো জানা গেছে, আব্দুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়াসহ লিভার ও কিডনি সমস্যায় ভুগছে। বর্তমানে টাকার অভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ হতে বসেছিল।
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল খলিল খাঁ সন্তানের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে আকুল আবেদন জানান।
তার এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মিজানুর রহমান মিজান নামের এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সহযোগিতা চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দেয়।
সহযোগিতা চেয়ে দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসটি জেলা প্রশাসক বরিশাল এস এম অজিয়র রহমানের নজরে এলে তিনি শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সমাজসেবার মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার ওষুধ প্রদান করেন।
আক্রান্ত শিশুর পাশে ডিসি
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, শিশুটির চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদফতর থেকে জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
এ-সময় তিনি শিশুটির চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
—প্রতিবেদক পেরেন্টিং
…
আক্রান্ত শিশুর পাশে ডিসি। এবার জানুন লক্ষণসমূহ
রোগের লক্ষণ
- অতিরিক্ত আয়রন
- সংক্রমণ
- অস্বাভাবিক অস্থি
- প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া
- অবসাদ অনুভব
- দুর্বলতা
- শ্বাসকষ্ট
- মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
- অস্বস্তি
- ত্বক হলদে হয়ে যাওয়া (জন্ডিসে আক্রান্ত)
- মুখের হাড়ের বিকৃতি
- ধীরগতিতে শারীরিক বৃদ্ধি
- পেট বাইরের দিকে প্রসারিত হওয়া বা বৃদ্ধি পাওয়া
- গাঢ় রঙের প্রস্রাব
- হৃৎপিণ্ডে সমস্যা
থ্যালাসেমিয়া
থ্যালাসেমিয়া (ইংরেজি : Thalassemia) একটি অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রক্তের রোগ। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়।
এই রোগ-ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা “অ্যানিমিয়া”তে ভুগে থাকেন। অ্যানিমিয়ার ফলে অবসাদগ্রস্ততা থেকে শুরু করে অঙ্গহানি ঘটতে পারে।
এর দুইটি প্রধান ধরনের হতে পারে : আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বেটা থ্যালাসেমিয়া। সাধারণভাবে আলফা থ্যালাসেমিয়া ß থ্যালাসেমিয়া থেকে কম তীব্র।
আলফা থ্যালাসেমিয়াবিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগের উপসর্গ মৃদু বা মাঝারি প্রকৃতির হয়।
অন্যদিকে, বেটা থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা বা প্রকোপ অনেক বেশি; এক-দুই বছরের শিশুর ক্ষেত্রে ঠিকমত চিকিৎসা না করলে এটি শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
বিশ্বে বেটা থ্যালাসেমিয়ার চেয়ে আলফা থ্যালাসেমিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি।
আলফা থ্যালাসেমিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীনের সর্বত্র এবং কখনো কখনো ভূমধ্যসাগরীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের লোকদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়।
প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১ লক্ষ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। [উইকিপিডিয়া]